১০০ সংখ্যাটিকে আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
– ব্যাটসম্যানদের কাছে যে সংখ্যা বা রান তাকে করে অনন্য, কিংবা কোনো বোলার যখন একশ উইকেটের মাইলফলক অর্জন করেন তখন এই একশ তাকে এনে দেয় সুখের উপলক্ষ। শচীন টেন্ডুলকার যদি একশ নিয়ে ভাবতে বসেন তাহলে সর্বপ্রথম তার মাথায় কি আসবে? নিশ্চয়ই ‘সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি’। আর মিচেল স্টার্ক ভাবলে?
– একশ মাইলের বোমা তিনি ছুড়ছেন ব্যাটসম্যানের দিকে।
যে যেভাবেই ডিফাইন করুক না কেন, একশ যে একটা ম্যাজিক ফিগার তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মিচেল স্টার্ক ‘নার্ভাস নাইন্টিজে’ কাঁটা পড়েছেন সর্বমোট তিনবার। একবার টেস্টে ব্যাট হাতে আর বাকি দুবার বল হাতে! ঘণ্টায় ৯৯ মাইল ছাড়িয়েছিলেন দুবার, কিন্তু কাছে গিয়েও একশ মাইলের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করা হয়নি মিচেল স্টার্কের। শোয়েব আখতার, ব্রেট লি ও শন টেইটের পর ইতিহাসের চতুর্থ বোলার হিসেবে এই গণ্ডি পেরুতে চান তিনি। সেজন্য শরীরকে প্রস্তুত করতে খাটছেন এই অস্ট্রেলিয়ান।
যখন থেকে গতির রেকর্ড রাখা হয়, তার পর থেকে ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে ঘণ্টায় ১০০ মাইলের গণ্ডি পেড়িয়েছিলেন পাকিস্তানের স্পিডস্টার শোয়েব আখতার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০৩ বিশ্বকাপের ম্যাচে ঘণ্টায় ১০০.১ মাইল (১৬১.৩ কিমি/ঘণ্টা) গতিতে বল করেন গতি তারকা শোয়েব। ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুতগতির বল হিসেবে এখনো টিকে আছে এই রেকর্ড। তবে শোয়েবের রেকর্ডের খুব কাছে গিয়েছিলেন স্টার্কের দুই স্বদেশী ব্রেট লি আর শন টেইট। ২০০৫ সালে ব্রেট লি ঘণ্টায় ১০০.১ মাইল গতিতে বল করেন (১৬১.১ কিমি/ঘণ্টা) আর ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একই গতিতে বল করেন শন টেইট।
এদের পাশে বসার অনেক কাছে চলে গিয়েছিলন স্টার্কও। পাঁচ বছর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘণ্টায় ৯৯.৭ মাইলে (১৬০.৪ কিমি/ঘণ্টা) বল করেন তিনি। এরপর আরও একবার ৯৯ মাইলে বল করেছিলেন তিনি। সেটা মনে করিয়েই বললেন গতির ম্যাজিক ফিগারে যেতে এখনো উদগ্রীব তিনি, ‘এটা করতে পারা হবে দারুণ ব্যাপার। দুইবার আমি কাছাকাছি গিয়েছিলাম। এটা করতে গিয়ে দুবারই চোট পাই। কাজেই ১০০ মাইল গতি তুলতে আমাকে প্রস্তুতি নিতে হবে। অতিরিক্ত জিম করতে হবে, বাড়তি বিশ্রাম নিয়েও শরীরকে তৈরি করতে হবে।’
তবে এ নিয়ে কাজও শুরু করে দিয়েছেন স্টার্ক। পাঁচ কেজি মাসল স্ট্রেন্থ বাড়িয়েছেন তিনি।
এখন আর আগের মতো গতির ঝড় দেখা যায় না ক্রিকেটে। টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা মেনে লাইন-লেন্থে মন দিতে গিয়ে অনেক সময় গতিতে ছাড় দেন পেসাররা। গত অ্যাশেজে ইংল্যান্ডে একই মানসিকতায় খেলেছিলেন স্টার্কও। তবে এখন আর গতিতে ছাড় দিতে রাজি নয় বাঁহাতি স্টার্ক, ‘আমি প্রচণ্ড জোরে বল করতে চাই এর সঙ্গে আর আপোস করব না।’
বর্তমানে সকল।ক্রিকেটার দৌড়াচ্ছে টাকার পিছনে। আরো খোলাসা করলে, আইপিএল সেই টাকার উৎস। এখানেও ব্যতিক্রম স্টার্ক! আইপিএল খেলার সুযোগ থাকলেও সেটা নিচ্ছেন না তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কথা ভেবে নিজেকে তৈরি করছেন ৩০ বছর বয়সী এই পেসার।