ক্রিকেটের খেলাটির উৎপত্তি দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে হয়েছিল এবং আঠের শতাব্দীতে দেশের জাতীয় খেলা হিসেবে মর্যাদা পায় এর পরবর্তীতে উনিশ এবং বিশ শতকে ইংরেজেদের হাত ধরে বিশ্বব্যাপী বিকাশ লাভ করে।
এই খেলার প্রাথমিক উপকরণগুলির মধ্যে অন্যতম হল ক্রিকেট বল। ক্রিকেট বল হল ক্রিকেট খেলায় ব্যবহৃত শক্ত ধরনের বল। বলের দ্বরা মূলত ক্রিকেট খেল হয় এবং এর মাধ্যমে ব্যাটসম্যানরা রান করে।
ক্রিকেটের ব্যাটগুলিতে সময়ের সাথে সাথছ বেশ পরিবর্তন এসেছে। তবে ক্রিকেট বলে তেমন খুব বেশি সংশোধন করা হয়নি শুধুমাত্র এবং তাদের বর্ণের পরিবর্তন ছাড়া(লাল, সাদা, গোলাপী) আর সব মোটামুটি একই রকম রয়েছে।
লাল বলগুলি সবচেয়ে প্রাচীন ধরনের ক্রিকেট বল যা টেস্ট ম্যাচ এবং প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলতে ব্যবহৃত হয়। লাল বলগুলি ১৯৭৭ সাল অবধি সমস্ত ধরণের ক্রিকেট খেলাতে ব্যবহৃত হত। লাল বল নতুন অবস্থায় সিমের জন্য অনেক সুয়িং করে। কিন্তু একবার পুরনো হয়ে গেলে কিছুটা দেড়িতে আসে এবং রিভার্স সুয়িং করে। আজকাল লাল বল কেবলমাত্র ক্রিকেটের দীর্ঘতম ফরমেটে অর্থাৎ টেষ্ট ম্যাচ ও প্রথম শ্রেণির ম্যাচগুলিতে ব্যাবহৃত হয়ে থাকে।
ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেটে প্রথম সাদা বলের ব্যবহার শুরু হয়েছিল যা কেরি প্যাকার ১৯৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু করেছিলেন। ওয়ার্ল্ড সিরিজের পরে, সাদা বল এবং রঙিন পোশাক ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ম্যাচের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছিল। সাদা বলগুলি এই ফরমেটের জন্য নির্ধারণ করা হয়। এর পর থেকেই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
ডে-নাইট টেস্ট ম্যাচের ধারণার প্রবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গোলাপী বলের গ্রহণযোগ্যতা দেখা দেয়। যেহেতু লাল বলগুলি রাতের সময় ভাল দেখা যায় না। তাই ডে-নাইট টেস্ট ম্যাচগুলিতে লাল বল ব্যবহার করা হয় না।
২০০৯ সালে, মেলবর্ন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) গোলাপী বল পরীক্ষা করার জন্য সুপারিশ করে এবং তখন থেকে এটি ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড এবং ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ব্যবহার করে আসছে। ২০১৫ সালের নভেম্বরে, অস্ট্রেলিয়া প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্টের জন্য নিউজিল্যান্ডকে আতিথেয়তা দিয়েছিল। এটি গোলাপী বলের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ হিসেবে ধরা হয়। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় যে গোলাপী বল রাতের বেলা ফার্স্ট বোলারদের সহায়তা করে।
গঠন
ক্রিকেট বলের অভ্যন্তরের মূল উপাদান কর্ক দিয়ে তৈরি, যা বলকে ওজন এবং বাউন্স করতে সহায়তা করে। কর্কটি শক্তভাবে দড়ির স্তর দ্বারা মোড়ানো থাকে এবং উপরিভাগে চামড়া সুতা দ্বারা সেলাইকরা থাকে। চামড়া গুলো সামান্য উত্থিত থাকে এবং সেলাই করা থাকে যা বলকে গ্রিপ করতে সহায়তা করে।
মাত্রা
ক্রিকেট বল তৈরির বিবরণ, মাত্রা, গুণমান এবং পারফরম্যান্স ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ড (বিএস) ৫৯৯৪ দ্বারা নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
১৭৪৪ সালে লিখিত প্রথম ক্রিকেট আইন অনুযায়ী বলটি ৫-৬ আউন্স ওজনের হতে হবে। ১৭৭০ এর দশকে, এর ওজন ৫.৫ থেকে ৫.৭৫ আউন্স (প্রায় ১৫৬-১৬৩ গ্রাম) নির্ধারিত হয় এবং পরিধিটি ছিল ৮.৮১২৫ থেকে ৯ ইঞ্চি (২২৫ থেকে ২২৯ মিমি)। উপরোক্ত মানদণ্ড বর্তমানের ক্রিকেট বলে অনুসরণ করা হয়।
নির্মাতা
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে, ক্রিকেটের বলের প্রধান তিনটি প্রস্তুতকারক রয়েছে প্রতিষ্ঠান রয়েছে- কোকাবুরা, ডিউকস এবং এসজি। টেস্ট ক্রিকেটের জন্য ব্যবহৃত লাল বলের ব্র্যান্ডগুলি বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ব্রান্ড ব্যবহার হয়। ভারত এসজি ব্যবহার করে, ইংল্যান্ড এবং উইন্ডিজ ডিউক ব্যবহার করে এবং অন্য সব দেশে কোকাবুরা ব্যবহার করা হয়।