ইউরো চ্যাম্পিয়ানশিপে নাটকীয় ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া কে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেন। যদি ফুটবল প্রেমিদের জিজ্ঞেস করা হয় ইউরো চ্যাম্পিয়ানশিপে মনে থাকার মতো ম্যাচ কোনটা তারা নিঃসন্দেহে বলবে গত কালকের ক্রোয়েশিয়া ও স্পেনের ম্যাচের কথা। সাথে এটা ও বলবে এমন শাসরুদ্ধকর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষ কবে ইউরো তে দেখেছি মনে নাই।
এইবার ইউরোতে যেনো আত্নঘাতী গোলের বন্যা বয়ে গেছে। গত কালকের ক্রোয়েশিয়া স্পেনের ম্যাচেও শুরুতেই আত্নঘাতী গোল করে বসে স্পেন এবং ০-১ এ এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া।
তারপর ডিফেন্স ঠিক রেখে আক্রমনাত্নক ফুটবল খেলে স্পেন পরপর তিন গোল করে জয়ের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়ায় ঠিক তখনই শুরু হয় নাটকীয়তা এখানেই ফুটবলের সৌন্দর্য তখন মনে পড়ে শেষ হয়েও হলো না শেষ। একদম শেষ মূহুর্তে শুরু হয় ক্রোয়েটদের আক্রমন, অবশেষে নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় সমতায় অর্থাৎ দুই দলের গোল তখন সমান সমান ৩-৩।
থেমে থাকেনি স্প্যানিশরা অতিরিক্ত সময়ে খেলতে নেমে জয় ছিনিয়ে আনে আরও দুই গোল করে, হ্যাঁ রাতে ঠিক এমন রুদ্ধশ্বাস ম্যাচেরই মঞ্চায়ন হয়েছে ডেনমার্কে।
মঙ্গলবার রাতে ইউরো চ্যাম্পিয়ানশিপের শেষ ১৬ এর লড়াইে ডেনমার্ক এর পার্কেন স্টেডিয়ামে শাসরুদ্ধকর ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া কে ৫-৩ গোলে হারিয়ে আসরে কোর্য়াটার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্পেন। শুরুতে গোলরক্ষকের ভুলে প্রেদ্রির আত্নগাতী গোলে পিছিয়ে পরে স্পেন, পরে সারাবিয়া,আ্যপিলিকুয়েতা ও ফেরান তোরেসের গোলে জয়ের দ্বার প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল লুইস এনরিকের দল।
কিন্তু হার মানে নি ক্রোয়েশিয়া এমন অবস্থায়ও হতাশ না হয়ে উল্টো আক্রমণ বাড়িয়ে দেয়। শেষ দিকে বদলি নামলো মারিও এবং অরসিক তারা নেমেই করলো বাজিমাত পরপর দুজন দুটি গোল করলো তারপর খেলা আনলো সমতায়। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে, সেখানে আলভারো মোরাতা ও মাইকেলের গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্প্যানিশরা।
তবে ইউরোতে ইতিহাস গড়লো স্পেন তারাই প্রথম দল যারা পরপর দুই ম্যাচে পাঁচ গোল করে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। এর আগে আসরের গ্রুপ পর্বে টানা দুই ম্যাচ ড্র করার পর শেষ রাউন্ডে স্লোভাকিয়াকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল লুইস এনরিকের দল।
স্পেনের কাছে হেরেও রেকর্ড করে বিদায় নিলো ক্রোয়েশিয়া। আসরে ৭গোল করেছে ক্রোয়েশিয়া এটা তাদের নতুন রেকর্ড এর আগে ইউরোপ শ্রষ্ঠত্বের এক আসরে কখনো এত গোল করতে পারেনি গেলো বিশ্বকাপের রার্নাসআপরা।
আট গোলের এই ম্যাচে ইউরোর ইতিহাসে ২য় সর্বোচ্চ এর আগে ১৯৬০ সালে ফ্রান্স বনাম যুগোস্লাভিয়া ম্যাচে ৯ গোল হয়েছিলো সেবার ফরাসিদের ৫-৪ গোলে হারিয়েছিলো যুগোস্লাভিয়া। শুরুতে স্পেনের পেদ্রির আত্মঘাতী গোলটি ছিলো আসরের নবম আত্মঘাতী গোল। ইউরোর ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তিন গোলের তিনগুণ আত্মঘাতী গোল হলো এবার। শেষ দিকে ক্রোয়েশিয়াকে ম্যাচে ফেরানোর পথে বদলি নেমে ইতিহাসের প্রথম ক্রোয়েট ফুটবলার হিসেবে গোল ও এসিস্ট করেন মিস্লাভ অরসিক।
অন্যদিকে অতিরিক্ত সময়ে স্পেন কে এগিয়ে দিয়ে বড় টুর্নামেন্টে নিজের ৫ম গোল করেন আলভারো মোরাতা। স্প্যানিশ ফুটবলা ইতিহাসে কেবল ফার্নান্দো তোরেসই জুভেন্টাস স্ট্রাইকারের সমান গোল করতে পেরেছেন, প্রশংসা করতেই হয় তার।