জ্যামাইকায় শেষ দিনে বৃষ্টি কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং, কোনটিই পাকিস্তানের জয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। দ্বিতীয় এবং শেষ টেস্টে ১০৯ রানের দাপুটে জয় পেয়েছে পাকিস্তান। ফলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-১ এ সমতায় থেকে শিরোপা ভাগাভাগি করে নিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং পাকিস্তান। আর ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ম্যাচ এবং সিরিজ দুই সেরার পুরস্কারই জিতেছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি।
এদিন সাবিনা পার্ক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারনী দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনে জয়ের জন্য পাকিস্তানের দরকার ছিল ৯ উইকেট আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৮০ রান। গতকাল ৪৯/১ দিন শুরু করা স্বাগতিকরা, পাকিস্তানি বোলারদের দারুণ বোলিং নৈপুণ্যে আজ ১৭০ রান যোগ করতেই শেষ ৯ উইকেট হারিয়েছে।
শেষ দিনে ব্যাটিংয়ে এসে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। ফলে দিনের তৃতীয় সেশনেই মাত্র ২১৯ রানে অলআউট হয়েছে তারা। মাঝে আবিদ আলী কর্তৃক সহজ দুটি ক্যাচ মিস আর বৃষ্টি বিপত্তি না ঘটলে খেলা আরও আগেও শেষ হতে পারতো। দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেছেন অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার। এছাড়া ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ৩৯ এবং কাইল মায়ার্স করেছেন ৩২ রান।
প্রথম ইনিংসে ৫১ রান খরচায় ৬ উইকেট শিকার করা শাহিন শাহ আফ্রিদি, দ্বিতীয় ইনিংসেও মাত্র ৪৩ রান খরচায় নিয়েছেন ৪ উইকেট। ফলে প্রথমবারের মতো এক টেস্টে ১০ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়লেন বাঁহাতি এই পেসার। যার ফলস্বরূপ ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে তার হাতে।
পাশাপাশি দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সর্বোচ্চ ১৮ উইকেট শিকার করে সিরিজ সেরার পুরস্কারও বাগিয়ে নিয়েছেন ২১ বছর বয়সী এই পেসার। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানের জার্সিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের নতুন রেকর্ডও এটি। এছাড়া প্রথম ইনিংসে মাত্র ১ ওভার বল করা স্পিনার নওমান আলী ৫২ রান খরচায় ৩টি এবং পেসার হাসান আলী ৩৭ রানে ২টি উইকেট শিকার করেছেন।
এর আগে ফাওয়াদ আলমের অপরাজিত সেঞ্চুরি এবং অধিনায়ক বাবর আজমের ফিফটি প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ৩০২ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান। জবাবে শাহীন আফ্রিদি ও মোহাম্মদ আব্বাসের বোলিং তোপে মাত্র গুটিয়ে যায় স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এরপর প্রথম ইনিংসে ১৫২ রানের বড় লিডের সাথে দ্বিতীয় ইনিংসে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে মাত্র ২৭.২ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৭৬ রান যোগ করে পাকিস্তান। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ৩২৯ রানের। যা শেষ পর্যন্ত নতুন ইতিহাস গড়ে তাড়া করা সম্ভব হয়নি।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ (টস – ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
পাকিস্তান প্রথম ইনিংসঃ ৩০২/৯ (ডিক্লেয়ার) (১১০ ওভার); ফাওয়াদ ১২৪*, বাবর ৭৫, রিজওয়ান ৩১; সিলস ৩/৩১, রোচ ৩/৬৮
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসঃ ১৫০/১০ (৫১.৩ ওভার); বোনার ৩৭, ব্ল্যাকউড ৩৩, হোল্ডার ২৬; শাহীন ৬/৫১, আব্বাস ৩/৪৪
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসঃ ১৭৬/৬ (ডিক্লেয়ার) (২৭.২ ওভার); ইমরান ৩৭, বাবর ৩৩, আবিদ ২৯; জোসেফ ২/২৪, হোল্ডার ২/২৭
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসঃ ২১৯/১০ (৮৩.২ ওভার); হোল্ডার ৪৭, ব্রাথওয়েট ৩৯, মায়ার্স ৩২; শাহীন ৪/৪৩, নওমান ৩/৫২
ফলাফলঃ পাকিস্তান ১০৯ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচঃ শাহীন শাহ আফ্রিদি
প্লেয়ার অব দ্য সিরিজঃ শাহীন শাহ আফ্রিদি