অবশ্যই মানুষ তবে প্রভাবিত হইনা

0
992

দীর্ঘ ১৫ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মাঠের পারফর্মেন্সে বাজে সময় খুব একটা আসেনি সাকিব আল হাসানের, তবে মাঠের বাহিরে অনেক বারই বেশ সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। কিন্তু সেসব সমালোচনা কিংবা চাপ কখনোই বাধা হতে পারেনি সাকিবের, সেটা আরও একবার প্রমাণ করে দেখালেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতেই ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে দিনটা কাটিয়েছেন সাকিব, ব্যাটে-বলে দুই বিভাগেই সমান সিদ্ধহস্ত সাকিব দুই বিভাগে এভাবে এক সাথে কখনোই দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যায়নি। ব্যাট হাতে ২৬ বল খেলে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে করেছেন ১৫ রান, অন্তত ২০ বল খেলে সবচেয়ে মন্থরতম ইনিংস ছিল যেটি।
বল হাতে তো আরও বাজে অবস্থা, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনো ৫০ রান না দেওয়া সাকিব ৪ ওভারে ৫০ রান দিয়ে কোন উইকেট পাননি। ড্যানিয়েল ক্রিশ্চিয়ানের হাতে এক ওভারে খেয়েছেন ৫টি ছক্কা, দীর্ঘ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সেই প্রথম সরাসরি সাকিবের কারণে ম্যাচ হেরেছিলো বাংলাদেশ।

দুঃস্বপ্নময় একটা ম্যাচের পর মাঝে ১টি দিনই মাত্র সময় পেয়েছেন, সেটাই যথেষ্ট হয়েছে সাকিবের জন্য। ব্যাটিংয়ে ছন্দ খুঁজে না পেলেও বল হাতে অস্ট্রেলিয়ানদের রীতিমতো গুড়িয়ে দিয়েছেন, নাচিয়ে ছেড়েছেন নিজের স্পিন ঘূর্ণিতে। ৩.৪ ওভার বোলিং করে ১ মেইডনসহ ৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪টি উইকেট, ম্যাচ সেরার পাশাপাশি হয়েছেন সিরিজ সেরাও।
একজন মানুষ কিভাবে এত কম সময়ে এভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাচ শেষে সাকিব জানিয়ে দিলেন তিনি কোন অতিমানব নন; রক্তে-মাংসে গড়া আর ১০ জনের মতো একজন মানুষ। তবে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন যে, চাপ কিংবা সমালোচনা খুব একটা প্রভাবিত করে না তাকে।

সাকিব বলেন, “অবশ্যই আমি মানুষ, (বাজে পারফর‌ম্যান্সে) প্রভাবিত অনেকেই হয়, অনেকে হয় না। আমি হয়তো নিজেকে ওইভাবে তৈরি করে নিতে পেরেছি। আমার চারপাশটাই অমন যেখানে আমাকে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা কম থাকে, সেদিক থেকে আমি অনেক ভাগ্যবান।”
শুধু দুর্দান্ত পারফর্মেন্সই নয়, ম্যাচে সাকিবের নামের পাশে যুক্ত হয়েছে ব্যক্তিগত অর্জনও। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১ হাজার রানের পাশাপাশি নিয়েছেন ১০০ উইকেট, শুধুমাত্র বোলার হিসেবেই উইকেটের সেঞ্চুরি ছিল একজনের; লঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গার পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে উইকেটের সেঞ্চুরি স্পর্শ করেছেন সাকিব আল হাসান।
এমন অর্জনের পর সাকিবের মন্তব্য, “অবশ্যই ভালো লাগে এরকম কোনো অর্জন যখন হয়। ব্যক্তিগত অর্জনগুলো অবশ্যই অনুপ্রাণিত করে দলের হয়ে ভালো খেলার জন্য। তবে এ যাবৎকালে যতজন সতীর্থের সঙ্গে খেলেছি, তাদের সাপোর্ট না পেলে এটা কখনোই সম্ভবত হতো না। তাদের সাপোর্ট, কোচিং স্টাফ-দর্শক, সবার সাপোর্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”