কোপা আমেরিকার জয়ের নায়ক ডি-মারিয়া।

0
1585

২৮ বছরের শিরোপা খরার অবসান ঘটলো, আর্জেন্টাইনদের মনে স্বস্তি আসলো। ফুটবলের জাদুকর মেসি পেলেন নিজের প্রথম ইন্টারন্যাশনাল ট্রফি। আর্জেন্টাইনদের জন্য অবিস্মরনীয় মুহূর্ত এবং দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। কোপা আমেরিকা সার্থক ভক্তদের উল্লাস দেখে মনে হচ্ছে ফুটবল জিতে গেলো, রাজার হাতে রাজদণ্ড উঠে গেলো। শিরোপা খরার এই উপমা আর লেখা হবে না মেসির নামের পাশে।

 

আজ (রোববার) কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলের বিখ্যাত মারাকোনা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে ২৮ বছর পর শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা। এই একটি ইন্টারন্যাশনাল শিরোপার জন্য ফুটবলের জাদুকর মেসির কত আক্ষেপ, কত বেদনা কত দুঃখ, ক্লাব ক্যারিয়ারে অসংখ্য শিরোপা জিতেও তাকে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে এই একটি শিরোপার জন্য।

অবশেষে লিওলেন মেসির সেই আক্ষেপ ঘুচেছে। আর্জেন্টিনাও তিন দশকের শিরোপা খরা কাটিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা নিজেদের ঘরে তুলে নিলেও। আর এই শিরোপা জয়ের নায়ক আর কেউ নন সম্পূর্ণ কৃতিত্ব আনহেল ডি-মারিয়ার। অভিজ্ঞ এই মিডফিল্ডারের এক গোলেই ব্রাজিলের মাঠে আর্জেন্টিনার স্বপ্নের জয়।

খেলা শুরুর পর থেকেই আ্যটাকিং খেলে আর্জেন্টাইনরা পুরো মাঠ জুড়ে রেখেছিলেন নিজেদের রাজত্ব তারা চিন্তা করে নেমেছিলেন মেসির জন্য যুদ্ধে নামছে মেসিকেই উপহার দিলেন যুদ্ধ শেষে তার প্রথম শিরোপা। প্রথমার্ধে ডি পলের পাস থেকে দুর্দান্ত এক গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন আনহেল ডি -মারিয়া। শেষ পর্যন্ত এই এক গোলই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক হয়ে যায়।

গত ২৮ বছরে চারবার ফাইনালে উঠার পরও বারবার পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় আলবিসেলেস্তদের। চার ফাইনাল হারার পর পঞ্চম বারের প্রচেষ্টায় মিলে সফলতা এ যেনো সেই কবিতার উদাহরণ একবার না পারিলে দেখো শতবার তবে শতবার অপেক্ষা করতে হয়নি আলবিসেলেস্তদের ৫ম বারেই স্বপ্নের ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছে।

রেফারির শেষ বাঁশি বাজার পরপরই মারাকোনার মাঠে দেখা গেলো ভিন্ন এক চিত্র। এক সময়ের সতীর্থ ব্রাজিলিয়ান নেইমার মেসির কাছে গেলো মেসি তাকে কাছে টেনে আলিঙ্গন করেন।

আলবিসেলেস্তরা ফাইনাল খেলেছে ফাইনালের মতই তাদের দাপটে ফুটবলের সামনে টিকতেই পারেনি নেইমার ফিরমিনহোরা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণাত্নক খেলা সত্বেও আর্জেন্টিনার জমাট রক্ষক ভাঙতে পারেনি ব্রাজিলের ফরোয়ার্ডরা। তবে ব্রাজিলিয়ানরা বোতল বন্দী করে রেখেছিলেন মেসিকে কিন্তু ত্রাতা হয়ে এলেন ডি-মারিয়া হয়তো ব্রাজিল কোচ তিতের বিশেষ কোনো পরিকল্পনা ছিলো না ডি-মারিয়ার জন্য।

আর এই জয়ের কৃতিত্ব একা যে ডি-মারিয়া পায় তাও কিন্তু নয় এতে শতভাগ দখল করে নিয়েছেন ফাইনালে উঠার জয়ের নায়ক এমি মার্টিনেজ যাকে মেসি উপাধি দিয়েছেন ফেনমেনন।

ব্রাজিলের গোলকিপার একধাপ সামনে এগিয়ে আসার কারণে জালে নির্ধিদ্বায় বল পাঠান ডি-মারিয়া। এই একটি মাত্র গোল হয় কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর শিরোপা যায় আর্জেন্টিনায়।

ম্যাচের একদম শেষ দিকে আর্জেন্টিনা আরো একটি সুযোগ পেলেও সেটি মিস করেন লিওনেল মেসি। গোলকিপারকে ড্রিবলিং করতে গিয়ে সহজ সুযোগ হাত ছাড়া না করলে ২-০ তে জিতে যেতো আর্জেন্টিনা।তবে ২-০ হোক কিংবা ১-০ তাতে কী আসে যায়।ফাইনাল অব্দি প্রতিটি ম্যাচে প্রায় সবকটি গোলের নায়ক মেসিকে এবার শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে ফাইনালে হাত বাড়িয়ে দিলেন সতীর্থ ডি-মারিয়া।

একটা আশ্চর্যকর পরিসংখ্যান হচ্ছে, এর আগে কখনো কোনো ফাইনালে ডি-মারিয়াকে ফুল ফিট পায়নি আর্জেন্টিনা। যতবার শিরোপার জন্য লড়ছে শিরোপার শেষ লড়াইয়ের দিন আনফিট থাকতো ডি-মারিয়া। তাই এইবার পরিকল্পনা ছিলো ভিন্ন আর্জেন্টিনার এবার স্বপ্ন সারথী জয়ের পথে ডি-মারিয়া প্রতি ম্যাচ খেলেননি প্রথম থেকেই। তবে ফাইনালে ডি-মারিয়া ছিলেন ম্যাচের শুরু থেকেই।

নিজের সেরা সুযোগ আর নষ্ট না করে শিরোপা ঘরে তুলে নিলেন তিনি। অভিনন্দন আর্জেন্টিনা