মাগুরার ফাইফার কিং

0
12002

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান ফাইফার নিয়েছেন ২১ টি যার ১৮টিই আবার টেস্ট ক্রিকেটে। একটা সময় টেস্ট খেলুড়ে সকল দলের বিপক্ষেই ছিল তার ফাইফার! টেস্টের নবীন সদস্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেললেও পাঁচ উইকেট শিকার করতে পারেন নি, তবুও নয়টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষেই ফাইফার থাকাও কম কিসে..?

সাকিব আল হাসান তার টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট লাভ করেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ২০০৮ সালের ১৭ই অক্টোবর। টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি মাত্র ৩৬ রান খরচায় তুলে নেন সাতটি উইকেট! যা এখন পর্যন্ত তার সেরা বোলিং ফিগার।

সাকিবের সর্বশেষ ফাইফার আসে ওয়েস্টইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১৮ সালের ১২ই জুলাই কিংসটাউনে! টেস্টটির দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩৩ রান খরচায় শিকার করেন ছয়টি উইকেট!

সাকিব আল হাসানের সবচেয়ে খরুচে ফাইফার ছিল ২০১৪ সালের ৪ই ফেব্রুয়ারি, চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে! টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৪৮ রানের বিনিময়ে শিকার করেন প্রতিপক্ষের পাঁচটি উইকেট!
সাকিব আল হাসানের সবচেয়ে মিতব্যয়ী ফাইফার ছিল ওয়েস্টইন্ডিজের বিপক্ষে কিংসটাউনে, ২০১৮ সালের ১২ জুলাই! মাত্র ৩৩ রানে তার শিকার ছয়টি উইকেট।

সাকিব আল হাসানের দীর্ঘতম ফাইফার অর্থাৎ যে ফাইফার শিকার করতে সবচেয়ে বেশি ওভার বোলিং করতে হয়েছে, সেটা এসেছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে ২০১৩ সালের ২৩শে অক্টোবর! ওই ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে তিনি পাঁচ উইকেট
শিকার করেন।
সাকিবের দ্রুততম ফাইফার আসে ২০১৮ সালের ১২ই জুলাই কিংসটাউনে, ওয়েস্টইন্ডিজের বিপক্ষে। ওই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৭ ওভারেই শিকার করেন প্রতিপক্ষের ছয়-ছয়টি উইকেট!

সাকিব আল হাসানের যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি পাঁচ উইকেট আসে কোনো টেস্টের প্রথম এবং দ্বিতীয় ইনিংসে! আঠারো ফাইফারের মধ্যে সাতটি করে মোট চৌদ্দটি ফাইফার আসে টেস্টের প্রথম ও দ্বিতীয় ইনিংসে! দুটি করে ফাইফার টেস্টের তৃতীয় ও চতুর্থ ইনিংসে।

সাকিব আল হাসানের সর্বোচ্চ তিনটি ফাইফার আসে যৌথভাবে ওয়েস্টইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। দুটো করে ফাইফার আসে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া , ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। একটি করে ফাইফার শিকার ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে।

সাকিব আল হাসান সর্বোচ্চ সাতটি ফাইফার শিকার করেন মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। চারটি ফাইফার আসে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। খুলনার আবু নাসের স্টেডিয়ামে পাঁচ উইকেট শিকার করেন দুবার! একটি করে ফাইফার আছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্লুফন্টেইনের আউটসুরেন্স ওভাল ও সেঞ্চুরিয়ানের সুপারস্পোর্ট পার্কে, ওয়েস্টইন্ডিজের সেন্ট জর্জেসের জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও কিংসটাউনের সাবিনা পার্কে। অপর ফাইফারটি আসে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে।

সাকিব আল হাসান পাঁচ উইকেট শিকারে সর্বোচ্চ গড় ছিল ৪.৩৫, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে।
সর্বনিম্ন গড় ছিল ১.৩৯, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ২০০৮ সালে।

ফাইফার শিকার করেও সাকিব ম্যাচ হেরেছেন দশটি, বিপরীতে জয় ছয়টি। নিষ্প্রাণ ড্র হয়েছে দুটি ম্যাচ।

ফাইফার শিকার করে সাকিব ম্যাচসেরা হয়েছেন পাঁচবার!

একই টেস্টে উভয় ইনিংসেই পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন দুইবার। প্রথমবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৪ সালের নভেম্বরে আর দ্বিতীয়বার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০১৭ সালের আগস্টে। উভয় ক্ষেত্রেই জয় পায় বাংলাদেশ এর উভয় ক্ষেত্রেই ম্যাচসেরা সাকিব আল হাসান।

সাকিব আল হাসান সাত উইকেট পেয়েছেন একবার, ছয় উইকেট পেয়েছেন চারবার। আর বাকি তেরবার পেয়েছেন পাঁচ উইকেটের দেখা।

ফাইফার শিকারে সর্বোচ্চ তিনবার সাকিব নিজের শিকারে পরিণত করেছেন জিম্বাবুয়ের এলটন চিগুম্বুরা ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে। দুইবার করে তার শিকার হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম, দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস, এবি ডি ভিলিয়ার্স, মার্ক বাউচার ও মরনে মরকেল, জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেইলর এবং অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।

সাকিব আল হাসান তার ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ চারটি করে ফাইফার শিকার করেছেন ২০০৮ ও ২০১৪ সালে! দুটি করে ফাইফার শিকার করেছেন ২০১০, ২০১১ ও ২০১৭ সালে! একটি করে শিকার করেছেন ২০০৯, ২০১৩, ২০১৬ ও ২০১৮ সালে। প্ৰথম ফাইফারের পর সর্বশেষ ফাইফার শিকার পর্যন্ত কোনো ক্যালেন্ডার ইয়ারে ফাইফার শিকারে তিনি ব্যার্থ হয়েছেন শুধুই ২০১২ ও ২০১৫ সালে।

লেখকঃ আসিফ আফনান পিয়াল