শামীম হোসেন খুব দ্রুত শেখেন

0
1543

শামীম হোসেন পাটোয়ারী ইতিমধ্যে বাংলাদেশের ফিনিশার হিসেবে বিশ্ববাসীকে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। তার পারফরমেন্সে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড়। একের পর এক তুলনা হচ্ছে সাব্বির, নাসিরের সাথে। আবার তাকে দেখে নাকি অনেকেরই মনে হচ্ছে “মিনি তামিম “। তবে যে যা ই বলুক সদ্য অভিষেক হওয়া এই মিনি হার্ডহিটার বাংলাদেশের হয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২য় টি-টোয়েন্টি জেতাতে পারেননি তাই আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। যদিও ঝড় এক ইনিংস খেলেছিলেন তবুও অনান্য ব্যাটাররা বা টপ অর্ডারের ব্যাটাররা তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যাওয়ার কারনে তিনি শেষ দিকে আর খেলা বের করে আনতে পারেনি‌। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩য় টি-টোয়েন্টি তে তার ঝড়ো ব্যাটিং যেনো এক নিমিষেই খেলার মোড় ঘুড়িয়ে ফেললো। জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৯৩ রানের বিশাল টার্গেট কে তিনি দুধ ভাত মনে করে ৩১* রানের চোখ ধাধানো ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।

তিনি মাত্র ১৫ বলে ৩১ রানের এই ইনিংসে ছয়টি বাউন্ডারি মারেন, যার মধ্যে পাঁচটি শেষ তিন ওভারে এসেছিল। তিনি মায়ার্সের বোলে তিনটি বাউন্ডারি মেরেছিলেন যেমন মায়ার্স তেমন মুজারাবানি কোনো জিম্বাবুয়ের বোলার কে ছাড় দেননি তিনি। মায়ার্সের বলে তিনটি বাউন্ডারি মারেন। কাভারের উপর দিয়ে তুলে একটি মারেন, রিডার্স সুইপে থার্ড ম্যানে একটি বাউন্ডারি মারেন, দারুন এক পুল শটে মিডউইকেটে একটা চার মারেন। তারপরে তিনি জয়ের রানে হিট করে খেলাটি শেষ করেন।

শামীমের কাছে তার অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে তিনি বললেন – আগের দিনের খেলা শেষ না করতে পেরে একটা আক্ষেপ আমার মধ্যে ছিল। আমি সেই সুযোগটি খুঁজছিলাম। আমি এখন সত্যিই ভালো বোধ করছি। আমি খুশি যে আমরা টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিিি, যা আমার প্রথম আন্তর্জাতিক সিরিজ ছিল। সৌম্য (সরকার) ভাই এবং (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ ভাই যখন একসাথে ব্যাটিং করছিলেন, তখন খেলা আমাদের পক্ষে ছিল। ড্রেসিংরুমে বসে থাকার সময় আমি নিজেকে বোঝচ্ছিলাম যে আমাদের অবশ্যই এই খেলাটি জিততে হবে। ”

ম্যাচটি মাহমুদউল্লাহ এবং সৌম্য সরকারের মধ্যে তৃতীয় উইকেটের সময় বাংলাদেশের পক্ষে অনেকটা চলে এসেছিল, তবে আফিফ হোসেনের আউট হওয়ার পরে মাহমুদউল্লাহ- শামীম হোসেনের সমন্বয়ে বেশ ভালো একটা অবস্থায় চলে আসে।

শামীম আরো বলেন, “রিয়াদ ভাই আমাকে বলেছিলেন যে প্রতি ওভারে ছয় বা একটি চার মারতে পারলে হয়ত আমরা ওভার প্রতি দশ রান নিতে পারব। তাহলে এটি আমাদের লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছে দেবে। এই পরিস্থিতিতে আমি আমার ভূমিকা পালন করতে চেয়েছি। ”

সৌম্য সরকারের ৬৮ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশের হারের সম্ভাবনা অনেকটা এরিয়ে দিয়েছিল শামীমের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ সৌম্য ।

সিনিয়র এই ব্যাটার জানিয়েছেন- “শামীম একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে ও খুব ইতিবাচক ক্রিকেট খেলেছে। খেলাটি জিততে সে কতটা ক্ষুধার্ত ছিল তা আমি জানি, আমার কাছে সত্যি খুব ভালো লেগেছে ওর এই ফেয়ারলেস ব্যাটিং। এটি ছিল ওর দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ, ও ওর কাজটা খুব ভালো ভাবে সম্পন্ন করেছে।”

গত বছর বাংলাদেশের বিজয়ী অনূর্ধ্ব -১৯ বিশ্বকাপ খেরার সময় শামীম নিজের সামর্থ বুঝিয়েছিলেন। নিজের একটি আলাদা পরিচয় বানিয়ে ফেলেছিলেন অনূর্ধ্ব -১৯ দলে একের পর এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলে । এই মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টুয়েন্টির সময় সিনিয়র দলের নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজমেন্টকে নিজের খেরোয়াড়ী জাত আরও ভাল ভাবে চিনিয়ে দিয়েছিলেন শামীম ।

শামীম জানান, “আমি এখান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে বুঝতে পারছি  এই জায়গাটা কতটা শক্ত। আমি এ পর্যন্ত অনূর্ধ্ব -১৯ ক্রিকেট এবং ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলেছি তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক আলাদা। একটি বাউন্ডারির ​​জন্য ভাল বলগুলিতে উপর টার্গেট করতে হয়, তবে লেভেলে আমাদের আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। ”

তবে এখানেই আমার দায়িত্ব শেষ বলে মনে করছি না। সামনেই অস্ট্রেলিয়া সিরিজ ৩ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। নিজের জায়গা দলে ধরে রাখতে হলে এমন অনেক ইনিংস খেলতে হবে দেশের স্বার্থে নিজের স্বার্থে।