শুভ জন্মদিন শেন ওয়াটসন

0
1985

১১ এপ্রিল ২০১১, মিরপুর!
বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ দলের ইনিংস শেষ হয় ৫০ ওভারে মাত্র ২২৯রানে। আর সে লক্ষ্য তাড়া করতে অস্ট্রেলিয়ার লাগলো মাত্র ২৬ ওভার। সমান পনেরটি করে ছক্কা-চারে ৯৬ বলে ১৮৬ রানের অতিমানবীয় ইনিংস খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান এক বিধ্বংসী ওপেনার । সেই ওপেনারের নাম শেন রবার্ট ওয়াটসন! ১৯৮১ সালের আজকের দিনে কুইন্সল্যান্ডের ইপসুইচে জন্মগ্রহণ করেন এই বিখ্যাত অলরাউন্ডার। আজ তার উনচল্লিশতম জন্মদিন। তার জন্মদিনে একবার উল্টে-পাল্টে দেখা যাক তার যত কীর্তিগাঁথা-

২০০২ সালের ২৪শে মার্চ সেঞ্চুরিয়ানে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া শেন ওয়াটসন ১৯০টি ওয়ানডে খেলে রান করেছেন ৫৭৫৭ এবং উইকেট নিয়েছেন ১৬৮ টি।

২০০৫ সালের ২ জানুয়ারি সিডনিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে তার। ২০১৫ সালের ৮ই জুলাই কার্ডিফে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট থেকে অবসরের আগপর্যন্ত করেছেন ৩৭৩১ রান আর উইকেট নিয়েছেন ৭৫ টি।

২০০৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি জোহানেসবার্গে টি-টুয়েন্টি অভিষেকের পর রান করেছেন ১৪৬২ এবং উইকেট নিয়েছেন ৪৮টি।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে শেন ওয়াটসন অপরাজিত ১৮৫ রান করেন, যেটি তার ওয়ানডে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। যেটিতে তিনি রেকর্ড ১৫টি ছয় মারেন। তার এই স্কোর দ্বারা তিনি কোনো অস্ট্রেলীয় হিসেবে ওডিআইতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাথু হেইডেনের করা ১৮১ রানকে কে অতিক্রম করে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন। তিনি এই ম্যাচে ১৫টি ছক্কা হাঁকিয়ে ২০০৮ সালে ওয়েস্টইন্ডিজের জেভিয়ার মার্শালের কানাডার বিপক্ষে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছয় (১২ ছয়) মারার পূর্বের রেকর্ড ভেঙে তৎকালীন রেকর্ড গড়েন। এই ম্যাচে তিনি সমান ১৫ টি করে চার-ছয় হাঁকিয়ে বাউন্ডারি কর্তৃক ১৫০ রান করে ২০০৬ সালে হার্সেল গিবসের বাউন্ডারি মেরে ১২৬ রান করার পূর্বের রেকর্ড ভাঙ্গেন। এটি একদিনের ম্যাচে এক ইনিংসে একজন খেলোয়াড় দ্বারা দলীয় সর্বমোট স্কোরের মধ্যে সর্বোচ্চ অনুপাতের রেকর্ড, তিনি দলীয় স্কোরের ৭৯.৭৪% রান একাই করেন।

দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৫০০০ + আন্তর্জাতিক রান এবং ১৫০ + উইকেটের ডাবল অর্জন করেছেন তিনি।

প্রথম ও একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই এক ইনিংসে সেঞ্চুরি আর চার উইকেটের রেকর্ড আছে শেন ওয়াটসনের।

টি -টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসে অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি ।
টানা দুটি আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচ অফ দ্যা ফাইনাল (২০০৬ ও ২০০৯) হয়েছিলেন তিনি।

শেন ওয়াটসন ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা পুরস্কার অ্যালান বর্ডার পদক পান। ২০১১ সালে আবারও অ্যালান বর্ডার পদক লাভ করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের পর দ্বিতীয় খেলোয়াড হিসেবে় তিনি পরপর দুইবার এ পদক লাভ করেছেন।

২০১১ সালে যিনি বর্ষসেরা ওয়ানডে খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। ওই বছরই বছরের দ্বিতীয় সেরা টেস্ট খেলোয়াড়ের পুরস্কার লাভ করেছিলেন। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই বর্ষসেরা ক্রিকেটার হওয়ার রেকর্ড তার। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে রেকর্ড সাতবার বর্ষসেরা ক্রিকেটার হয়েছেন তিনি।

২০১২ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি ৪৯.৮০ গড়ে ২৪৯ রান সংগ্রহের পাশাপাশি বল হাতে ১১ উইকেট পান। এরফলে তাকে ম্যান অব দ্য সিরিজ ঘোষণা করা হয়।বিশ্বমঞ্চে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ধারাবাহিকভাবে চারবার ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান তিনি।

২০০৭ ও ২০১৫ অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন ওয়াটসন। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার বলা হতো ওয়াটসনকে।

২০১৬ সালে এক ঝাঁক সাফল্য কে পুঁজি করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন ওয়াটসন। এরপর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে না দেখা গেলেও বিশ্বের বড় বড় টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্টে তাকে দেখা যায়। ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টেও যার রয়েছে অবাধ বিচরণ। ২০০৮ ও ২০১৩ সালে আইপিএলের ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট ঘোষিত হন তিনি।
২০১৮ পিএসএলের ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট তিনি।

শুভ জন্মদিন শেন ওয়াটসন। ?

লেখকঃ আসিফ আফনান পিয়াল