ক্রিকেটের অনন্য ইতিহাসের অংশ ইউএসএ

0
12817

খেলাধুলা বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের আবেগের একটা জায়গা, এবং আমাদের ক্রিকেটের চেয়ে বিশ্বের অন্যান্য খেলাধুলার খুব বেশি সমৃদ্ধ ইতিহাস নেই, ক্রিকেটের কয়েকশ বছরের পিছনের ইতিহাস রয়েছে।

আমরা জানি ক্রিকেটের উৎপত্তি ইংল্যান্ডে এবং বিশ্বব্যাপি এর প্রাচার প্রশার ইংরেজরাই করেছি। কিন্তু প্রথম ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ইউএসএ প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিল কানাডা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমেরিকা বর্তমানে খুব ভালো অবস্থানে না থাকলেও প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছে। আমেরিকার ক্রিকেটে তিন শতাব্দীরও বেশি সমৃদ্ধ ক্রিকেট ইতিহাস রয়েছে।

আমেরিকার ক্রিকেট নিয়ে এমন এক ইতিহাস রয়েছে যা যে কোন খেলা থেকে একে আলাদা করে রাখবে। আমেরিকার এমন অনন্য রেকর্ড রয়েছে যেটির সাথে কানাডা ও খুবই ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত।

যে কোনও খেলার ক্ষেত্রে প্রথম দুটি দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক খেলা ১৮৪৪ সালে হয়েছিল এবং তা ক্রিকেট ছিল। ঐ সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর আয়োজনে নিউইয়র্কে কানাডার সাথে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে।

এটি যে কোনও ধরনের খেলার ক্ষেত্রে প্রথম অফিশিয়াল আন্তর্জাতিক ম্যাচ। বিশ্বে তাই ২৪ শে সেপ্টেম্বর দিনটি সবসময় সমস্ত ক্রিকেট এবং যে কোন ক্রীড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ তাৎপর্য পূর্ণ দিন। এটি ক্রীড়া প্রেমীদের জন্য একটি অন্যতম দিন হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিৎ।

উক্ত ক্রিকেট ম্যাচটি নিউইয়র্ক সিটির সেন্ট জর্জেস ক্রিকেট ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, বর্তমানে ম্যানহাটনের ৩০নং স্ট্রিট এবং ব্রডওয়ে (তত্কালীন ব্লুমিংডলস)।২৪ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ উপভোগ করার জন্য আনুমানিক ২০,০০০ এর বেশি দর্শক সমাগম হয়েছিল।

খেলাটি দুটি দিনে শেষ হবার কথা থাকলেও দ্বিতীয় দিনে খারাপ আবহাওয়ার কারণে এটি শেষ পর্যন্ত তিন দিনে গড়ায়। এই ম্যাচটি তিন দিনে গড়ালেও খুবই লো স্কোরিং ছিল।

প্রথম দিন শেষে কানাডা ৮২ রান করে, জবাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৯ উইকেটে ৬১ রান করে। খারাপ আবহাওয়ার কারন দ্বিতীয় দিন কোনও খেলাই হতে পারেনি, সুতরাং খেলাটি তৃতীয় দিন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। যখন মার্কিনীরা তাদের প্রথম দিনে করা ৬১ রানের সাথে আর মাত্র তিন রান যোগ করে ৬৪ রানে অলআউট হয়ে যায়।

এরপরে কানাডা তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৩ রান করে। ইউএসএকে জয়ের জন্য ৮২ রানের টার্গেট দেয়। প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচটি নিয়ে আমেরিকার গর্ব করার চেয়ে আরও বেশি কিছু ছিল। সেই সাথে একসাথে জড়ো হওয়া দর্শকরি উক্ত ম্যাচের ফলাফল নিয়ে দারুণ বেট ধরেছিল।

শেষ পর্যন্ত কানাডা যুক্তরাষ্ট্রকে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৮ রানে অলআউট করে এবং ২৩ রানে জয়লাভ করে।

আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে উক্ত ম্যাচএট দু’দেশের মধ্যে দারুন প্রতিদ্বন্দিতার জন্ম দেয় যা আজ অবধি অব্যাহত রয়েছে। আমেরিকা এবং তাদের নিকটতম প্রতিবেশী দেশ কানাডার মধ্যে এখনও প্রতিবছর অটি কাপ খেলা হয়। এমন দারুন ঐতিহাসিক খেলের জন্য ঐ প্রজন্মের ক্রিকেটার যারা ছিলেন ১৭৩ বছর পূর্বে ১৮৪৪ সালে ইতিহাস রচনা করেছিলেন। যারা সেই ক্রিকেটের অগ্রজ ছিলেন তাঁদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেই পারি।